ভারত হয়ে রাশিয়ার তেল কেনায় কৌশলী হতে হবে বাংলাদেশকে!!! 

তাহলে তেলের দাম হাতের নাগালে আসতে পারে। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ দেউলিয়া হতে দুই বছর সময় লাগবে না তাহলে চলুন এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মানের বর্ণনা নিচে দেওয়া হল মতামতটি পুরোপুরি।

   ব্যক্তিগতঃ

Why soybean oil price increase in bangladesh?

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রভাবে জ্বালানি তেল আমদানি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বাংলাদেশ। আমদানিনির্ভর জ্বালানি তেল সংগ্রহ করা এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সংকট তৈরি হতে পারে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) হিসেবে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার পরও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিজেল বিক্রিতে লোকসান গুনছে সংস্থাটি। 

অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি থাকায় ফার্নেস অয়েল আমদানি বাড়াতে হয়েছে সরকারকে। সরকার ফার্নেস অয়েলের দাম চলতি অর্থবছর ছয়বার বাড়িয়েছে। ৪২ টাকার ফার্নেস অয়েল ৭৪ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোয় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতেও!

এমতাবস্থায় ভারত হয়ে রাশিয়ার তেল কেনার চেষ্টাটা যৌক্তিক। তবে কৌশলটা গোপনীয় না রেখে সাংবাদিকদের সামনে উন্মুক্ত করার বিষয়টি কৌশলগতভাবে একেবারেই ঠিক হয়নি! এর ফলে পুরো প্রক্রিয়াই আটকে যেতে পারে।

ইউক্রেন আগ্রাসনের পর রাশিয়ার তেল খাত ইউরোপ ও আমেরিকার আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আপত্তি অগ্রাহ্য করেই ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। রাশিয়াও ভারতকে তেল দিচ্ছে অনেকটাই কম দামে। ভারত যেহেতু বিশ্বের তৃতীয় বড় তেল আমদানিকারী দেশ, তাই রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনে বিদেশি মুদ্রার বিপুল সাশ্রয় করছে দিল্লি। রিফিনিটিভ আইকনের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানাচ্ছে. 

ভারত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মে পর্যন্ত ৩৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে 

২৪ মিলিয়ন ব্যারেল এসেছে শেষ এক মাসে। অর্থাৎ ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বাড়াচ্ছে, কমাচ্ছে না। বিশ্ববাজারে বর্ধিত থাকলেও গত ২১ মে প্রতি লিটার পেট্রল সাড়ে ৯ রুপি ও ডিজেলের দাম ৭ রুপি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে মাথানত না করে মূল্যছাড়ে রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনায় ভারতের প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী । তাঁর দাবি, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সরকারও এ ব্যাপারে কাজ করছিল।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে মস্কো বাংলাদেশকে তেল ও গম দিতে আগ্রহী হলেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ভয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা। যেহেতু রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেও রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারছে ভারত, এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল-গম কিনবে কি না, এ বিষয়ে দিল্লির কাছে ‘বুদ্ধি’ চেয়েছে ঢাকা। 

বিকল্প পন্যের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত বাংলাদেশের। 

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর হয়ে পড়েছে সয়াবিন তেলের বিষয় টিতে। বাংলাদেশের উচিত সোয়াবিনের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের সয়াবিনের পর্যাপ্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং সয়াবিনের বিকল্প একটি পণ্য কি সাপোর্ট করা। 

এতে করে সয়াবিন এর উপর যেমন নির্ভরতা কমবে তেমনি তেলের অন্য একটি যা থেকে দেশের তেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। 

বাংলাদেশের সরিষা প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয়। সেটি কেউ যদি পুরোপুরি ভাবে কাজে লাগানো যায় তাহলে বাংলাদেশের তেলের চাহিদা অনেকাংশেই পুরন হবে বলে আমি মনে করি। 

মজুদদারদের আশ্রয় না দেওয়া ;-

বর্তমান সময়ে মজুদদারদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে বেড়েছে অন্যান্য সময় এর চেয়ে। বর্তমান সময়ে মোবাইল কোড পরিচালনার মাধ্যমে বিপুল পরিমান সোয়াবিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দ করেছে প্রশাসন। 

প্রশাসনের এই বিষয়ে আরও জোরদার ব্যবস্থা ও নজরদারি প্রয়োজন। দেশে কৃত্তিম খাদ্যপণ্য সঙ্কট সৃষ্টি করে মজুতদার এরা বিপুল অংকের মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। 

এতে করে দেশ ও জাতি একটি সিন্ডিকেটের ওপর ধরা পড়ছে। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য পণ্য সরবরাহ থাকার পরেও বেশি দাম দিয়ে তা কিনতে হচ্ছে। 

প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারি এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং;-

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারি এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা। প্রশাসনের এই অনীহার কারণে খাদ্যপণ্যের এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। 

অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের মনমতো খাদ্যপণ্য এবং অন্যান্য পণ্যের দাম ভক্তদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে। এতে করে সাধারণ মানুষ সবদিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

Present Sri Lankan economic crisis একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে পারে আমাদের কাছে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য। 

আসলে আমার মনে হয় প্রশাসন যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতো তাহলে খাদ্যপণ্য কিংবা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কখনো বৃদ্ধি পেত না। তাদের এই বাজার মনিটরিং এর অবহেলার কারণেই আজ দ্রব্যমূল্য সাধারণ জনগণের হাতের বাইরে। 

মুদ্রাস্ফীতি রোধ করা ;-

সরকারের উচিত মুদ্রাস্ফীতি যেন গলার কাঁটা না হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা। শ্রীলংকার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও যেন ভবিষ্যতে আমাদের কখনো পড়তে না হয়। বড় বড় মেগা প্রকল্পের নাম দেশের অর্থ যেন দেশের বাইরে পাচার না হয়। পিকে হালদারের মত আর কেউ যেন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে বাংলার মাটিতে। 

ডলারের সাথে টাকার মান সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার জন্য যা যা করণীয় তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ যেন সেভাবে রাখা হয়। 

দেশের জনগণের কিছু কাজ ও দায়িত্ব ;-

বর্তমান সময়ে আমরা দেখেছি যখন জানতে পারি পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বৃদ্ধি পাবে তখন সেটি কিনা থেকে বিরত হওয়ার পরিবর্তে আমরা আরো বেশি বেশি কিনতে থাকি। 

এতে করে বাজারের উপর চাহিদা বেড়ে যায় মজুতদার আসে সুযোগে  সেই পণ্যগুলোকে মজুদ করে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে দেয়। 

সেটা বেশিদিন আগের কথা নয় 2021 সালে যখন শোনা গেল লবণের দাম বৃদ্ধি পাবে আমরা আমরা জেনে শুনে তাও লবণ সবাই 5 থেকে 7 বা 10 কেজি করে লবণ কিনে নিজেদের ঘরে নিয়ে গেলাম। 

কেন ভাই আমাকে এমন কেন করতে হবে? আমাদের বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আছে সেটা কি আমরা ভুলে গিয়েছি। না ভুলে যাইনি কিন্তু সংগত কারণেই আমরা আমাদের বাঙালির স্বভাবে চীনে নিজেদের ঘরে নিয়ে রাখার মন মানসিকতা থেকেই এটা করলাম। 

আমার অবাক লাগে এই বিষয় গুলো দেখি। দাম বাড়ার কথা শুনলে মানুষ কমকম কেনার পরিবর্তে আরো বেশি বেশি কিনে নিজেদের ঘরে নিয়ে জমিয়ে রাখার চেষ্টা করে।

 এসব টেন্ডেন্সি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এবং সরকারের সদিচ্ছা এবং বাজার মনিটরিং থাকতে হবে। 

আমি সম্পূর্ণ আমার মতামত প্রকাশ করলাম। আপনাদের অনেকেরই ভিন্নমত থাকতে পারে। আমি ভিন্ন মুহূর্তে সব সময় সাদরে গ্রহণ করে থাকি। আপনাদের মতামত জানিয়ে দিন কমেন্ট বক্সে।