সম্পর্ক কি?
সম্পর্কের আসলে বিভিন্ন সংজ্ঞা আছে। বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক হয়ে থাকে। মানুষ তার নিজ নিজ সম্পর্কে বেঁচে থাকে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বাবা-মা সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক এবং প্রেমের সম্পর্ক। প্রত্যেকটা মানুষ কোন না কোন সম্পর্কে জড়িত সব সম্পর্কের জের ধরেই আজ মানবজাতি এত বড় সংগঠন সৃষ্টি করেছে পৃথিবীর বুকে। সব সম্পর্কের নিজ নিজ বর্ণনা রয়েছে ।
প্রেমের সম্পর্ক -
একটি ছেলে একটি মেয়ে তাদের সবটুকু দিয়ে একে অন্যকে ভালবাসে। একে অন্যর সাথে জীবন যাপন করতে চাই। পৃথিবীর মধ্যে আরেকজনের পরিপূর্ণ হয়ে থাকতে চায়। যেন একজন
আরেকজনকে ছাড়া সবসময়ই অপূর্ণ থাকে।
মধুর সম্পর্ক গুলো আসলে এরকমই হয় প্রেমের ছোঁয়ায়। যেন তারা সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ায় । এভাবেই চলতে থাকে তাদের যুগ যুগ ধরে প্রেমের সম্পর্ক সম্পর্কের মধ্যে বোঝাপড়াটা হলে একটি সময়ে সেই সম্পর্কটা আসলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হয়ে যায়।
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক -
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে মধুর কোন সম্পর্ক থাকলে আসলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। শ্রেয় এর চেয়ে মধুর সম্পর্ক যেন আর কোথাও কখনোই খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা এমন একটা সম্পর্ক যা মৃত্যু পর্যন্ত একে অন্যের সাথে বেঁধে রাখে। একজন আরেকজনের চলার সাথী হয়ে থাকবে আজীবন মাঝখানে যত বাধাই আসুক যেন মাঝখানে একটা দেয়াল হয়ে দুজন দুজনের পাশে দাঁড়ায় এর চেয়ে শক্ত সম্পর্ক যেন আর হয় না।
ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হলো নেক একটা সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তাদের আশার আলো নিয়ে তাদের মুখ উজ্জ্বল করে তাদের ঘড়র উজ্জ্বল করে যখন এক ছোট্ট শিশুর জন্ম নেয় তখন আপনা আপনি দায়িত্ব হয়ে যায়। তাদের বাবা-মা হওয়ার এ যেন এক নতুন সম্পর্কের দ্বারপ্রান্তে তারা বাবা-মা ছোট্ট শিশু নতুন সংসার। নতুন জীবন তারপর শুরু হয় তাদের নতুন দায়িত্ব বাবা-মা।
বাবা মায়ের সম্পর্ক ও দায়িত্ব -
বাবা মা যেন প্রত্যেকটা ছেলে বা মেয়ের জীবনে আল্লাহ প্রদত্ত সর্ব শ্রেষ্ঠ উপহার। পৃথিবীতে যত আপন আপন সম্পর্ক থাকুক বাবা মা যেন সকল সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। মা-বাবা এদের বর্ণনা লিখে সব লিখে শেষ করা সম্ভব না। একটা ছেলের বা একটা মেয়ের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দায়িত্ব নিতে হয় বাবার মায়ের। সকল দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তাদের তারা তাদের ছেলে মেয়েকে মানুষ করে। আসলে বাবা না হলে বোঝার উপায় নেই একটা ছেলে তার বাবার কাছে কি এবং মা না হলে বোঝা যায় না আসলে মায়ের কাছে তার ছেলেমেয়ে কি।
ছেলে-মেয়ের জন্য তাদের মনের মধ্যে তাদের কেমন লাগে এটা একমাত্র তারাই জানে যারা বাবা-মা। ঘরে যখন খাবার না থাকে মা না খেয়ে ছেলের জন্য একটু খাবার বাঁচিয়ে রেখে। যখন বলে বাবা আমি আমি খেয়েছি তুমি খেয়ে নাও , বাবার পকেটে যখন এক টাকাও না থাকে স্কুল ফিস এর জন্য যখন বাবার কাছে টাকা চাওয়া হয় বাবা তখনো না করবে না এর যেকোনো ভাবে টাকা ব্যবস্থা করে নিয়ে আসবে। বাবারা কখনো ভালো পোশাক পড়ে না কিন্তু ছেলেমেয়ের জন্য ঠিক নতুন নতুন পোশাক নিয়ে আসে। মা ভালোভাবে একটা নতুন শাড়ি কিনতে পারে না কিন্তু মেয়েকে ঠিক পরীর মত সাজিয়ে রাখে।
বাবা মায়ের ঋণ কোনদিন কোন অংশে কোনোভাবেই শোধ করা সম্ভব না বাবা যেন সকল সম্পর্কের দায়িত্ব নিয়ে বসে আছে তার মেয়েকে পরিয়ে বড় ডাক্তার বানাবে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবে, মেয়েকে ভাল দেখে ভালো ঘরে বিয়ে দিতে হবে। সারা জীবন যত কাজ করুক যত কষ্টই করুক সবকিছু আসলে কাদের জন্য তার ছেলে মেয়ের জন্যই করে থাকে এরাই আসলে বাবা-মা। মোট কথা বাবা-মায়ের সম্পর্কেই একমাত্র সম্পর্ক যেখানে সকল কিছুর দায়িত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। আসলে আমরা কোন সম্পর্ক পরিমাপ করতে পারিনা। সব সম্পর্ক যেন অদৃশ্য হয়ে থাকে শুধু অনুভব করা যায়।
বাবা-মা আসলে কখনোই চায় না তার ছেলে বা মেয়ে কখনো কারো কাছে ছোট হয়ে থাকুক, তারা চায় তাদের ছেলে বা মেয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকুক তাই তারা তাদের সবটুকু দিয়ে তাদের ছেলে মেয়েকে মানুষ করার চেষ্টা করেন। এজন্য প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়ের উচিত তাদের বাবা-মা কে দেখাশোনা করা। পৃথিবীর প্রত্যেকটা বাবা বাবা যেন হাসিখুশি থাকে, আসলে আমরা যে রকম চিন্তা করি এরকম হয়না কখনো সম্পর্কগুলো কিছু কিছু সময় যেন বিলুপ্ত হয়ে যায় ।
বাবা মায়ের সাথে ছেলের মেয়ের সম্পর্ক যদি ঠিক থাকত তাহলে বৃদ্ধাশ্রম বলে এই জেলখানা পৃথিবীর বুকে কখনো তৈরি হতো না । এমন সম্পর্ক যেন কখনো তৈরি না হয় যে সম্পর্কে বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হয় । ভালো থাকুক পৃথিবীর সব বাবা-মা ভালো থাকুক সম্পর্ক গুলো। ।।।।।
ভাই-বোনের সম্পর্ক ;
ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন। ভাই বোন- ছোটবেলা থেকে যেন ভাই-বোন একই শরীরের হাতের ডান হাত ও বাম হাত । বড় ভাই থাকলে তার বোনকে যেন বাবার মতো আগলে রাখেন আর বড় বোন তার ভাইকে মায়ের মতো, একটা পরিবার এ ভাই-বোন না থাকলে যেন পরিবার টা অসম্পূর্ণ মনে হয় ।
বোন ছাড়া ঘরটা যেন অগোছালো অগোছালো মনে হয়। ছোটবেলা থেকে কত দুষ্টামি খাবার নিয়ে মারামারি অনেক মজা । অটুট থাকুক ভাইবোনের সম্পর্ক আজীবন। সবকিছু শেষে এতোটুকু বুঝতে পারেন যে আসলে সম্পর্কটাই হচ্ছে এক ধরনের মায়াজাল যা আপনাকে আটকে ধরে রাখে। যেখান থেকে আপনি বের হতে চাইলেও সহজে বের হতে পারবেন না। আপনাকে সেই মায়াটা বারবার টানবে এই মায়ার প্রাণটাই আসলে সম্পর্ক।
বন্ধুত্ব
আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা সবকিছু নিহিত এ সম্পর্কের মধ্যে। ছোট থেকে বড় হয়েছেন স্কুল,কলেজ,ইউনিভার্সিটি সবজায়গাতেই আপনার অনেক অনেক অনেক বন্ধু হবে কিন্তু কিছু কিছু বন্ধুত্বের সম্পর্ক আজীবন আপনাকে মনে রাখবে। বন্ধু এমন একটা সম্পর্ক যেখানে আপনি আপনার ভাইকে খুঁজে পাবেন। আপনার আপন মানুষকে খুঁজে পাবেন।
আপনার নীরবতাকে সঙ্গ দেওয়ার একজন মানুষ পাবেন আপনার আপনার আবেগ অনুভূতি সবকিছু বলার একটা ভালো মানুষ পাবেন। যাকে আমরা এককথায় বন্ধু বলে থাকি। অচেনা শহরে অচেনা জায়গা যেখানেই থাকবেন। কেউ না কেউ আপনার বন্ধু হয়ে থাকবে যে আপনার সঙ্গ দেবে। বন্ধুত্ব সম্পর্কটা আবার অন্যরকম যেখানে যে কারো সাথে যে কারণে বন্ধ হতে পারে। এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, আপনি বড় চাকরি করেন আপনার কৃষকের সাথে বন্ধুত্ব হতে পারে, আপনি কৃষিকাজ করেন আপনার বড় ব্যবসায়ীর সাথে বন্ধুত্ব হতে পারে।
শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীর বন্ধুত্ব হতে পারে। মানুষ আসলে বন্ধুত্ব করতেই বেশি ভালোবাসে। সম্পর্ক করতে ভালোবাসে।
বিরূপ সম্পর্ক -
ভুল মানুষের সাথে যখন সম্পর্কটা হয়ে যায় তখন আমরা সেটাকে বিরূপ সম্পর্ক বলি। হোক সেটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক বা ভালোবাসার, সবকিছুর যেমন ভালো দিকগুলো থাকে এ কিভাবে খারাপ দিকগুলো থাকে। ভালোবাসার মানুষটা যখন অচেনা হয়ে যায় তখন বোঝা যায় যে সম্পর্কটা কি।
বন্ধু যখন শত্রুতে পরিণত হয় তখন বোঝা যায় সম্পর্ক কি, আসলে এগুলো কোন কিছুই থাকত না যদি বিকৃত মন মানসিকতা আমাদের সমাজে না থাকতো। এইসব বিকৃত মন-মানসিকতার মানুষদের জন্যই আমাদের সমাজে আজ সম্পর্ক গুলো বিরূপ সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। মানুষ একজন আরেকজনের সাথে সম্পর্ক তখনই করে যখন একজন আরেকজনকে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করে ওঠে।
যখনই বিশ্বাসকে মাটি দিয়ে মানুষ একজন আরেকজনকে আঘাত করে তখন সম্পর্কের কোন মূল্য থাকে না । তখন সম্পর্কগুলো যেন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু বিবেচনা করে আসলে আমাদের সম্পর্কটা করা উচিত। চোখের জলে যে সম্পর্ক শেষ হয় সে সম্পর্ক যেন কখনো না হয়। ভালো থাকুক সকল সম্পর্ক ভালো থাকুক সকল ভালোবাসার মানুষ।।।
সুন্দর এই ব্লগটি লেখার জন্য ধন্যবাদ MD.KAMRUL HASAN কে।

2 Comments