বর্তমান দুনিয়া সম্পুর্ণ অনলাইন ভিত্তিক। অনলাইনে আয়ের সুযোগ ও সৃষ্টি হচ্ছে। অনলাইনে গড়ে উঠছে বিভিন্ন বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। দেশের যুব সমাজ নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে আসছে সেই সুবাদেই।
যুব সমাজের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এসব ই-কমার্স এবং অনলাইনে আর্নিং। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বর্তমানে যুবকেরা অনলাইনে উপার্জনের একটি পথ প্রসারিত করেছে।
1. ফ্রিল্যান্সিং
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশা হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সার হলো মুক্ত পেশাজীবি। বর্তমানে মুক্ত পেশা হিসেবে সারা পৃথিবী ব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে ফ্রিলানান্সিং।
কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে তা আমাদের হাতে ধরা দিয়েছে। কল্পনা বা কোন সাইন্স ফিকশন নয় বাস্তবেই এখন কম্পিউটার দিয়ে ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব হচ্ছে।
তাছাড়া আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের কথা না বলে থাকায় যাবে না। অনলাইনে আয়ের কথা আসলে তাদের নাম আসবে সবার আগে। তাদের হাত ধরেই বাংলার মানুষ দেখেছে ইন্টারনেট থেকেও উপার্জন করা সম্ভব।
তাছাড়া তাদের গ্রাফিএক্সের কাজ যেকোনো দেশের তুলনায় মানস্মত এবং সস্তা। যার কারনে সারা দুনিয়া ব্যাপি ছড়িয়ে পড়ছে তাদের প্রশংসা।
2. ইউটিউব থেকে আয়।
বর্তমানের সব চেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট হলো ইউটিউব। ইউটিউবে হাজারো তরুন তাদের ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট তৈরি করে উপার্জনের একটি নতুন ধার পেয়েছে। ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তা চেতনা কিংবা তাদের মুক্ত ভিন্তা ভাবনা থেকে তারা অর্থ উপার্জন করছে।
ইউটিউব বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। একটি ইউটিউব চ্যানেল হতে পারে সেটি টেক চ্যানেল কিংবা সেটা হতে পারে টেক রিভিউ চ্যানেল। ফুড ব্লগ থেকে শুরু করে পার্সোনাল ব্লগ সবই এখন হচ্ছে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে। ইউটিউবে বর্তমান যুবকরা তাদের মুক্ত চিন্তা ধারণা এবং তাদের নিজেদের ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছে। এতে করে মুক্ত চিন্তা চেতনা যেমন বিকাশ হচ্ছে তেমনি যুবকদের উপার্জনের একটি পথ প্রসারিত হচ্ছে। ইউটিউবে শুধু একবার ব্লক বিষয়গুলো নয় যুবকদের কাছে এখন জনপ্রিয় হচ্ছে অভিনয় ভিত্তিক জীবন বিভিন্ন মজার মজার ভিডিও।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে র কল্যাণেও অনলাইনে আয়ের পথা প্রসারিত হয়েছ;-
তাদের মধ্যে অন্যতম
a) মোটরসাইকেল ব্লগ,
b) ট্রাভেল ব্লগ,
c) গেমিং স্ট্রিম চ্যানেল,
d) ফুড ব্লগ,
e) এনিমেশন সহ নানান বিনোদনধর্মী চ্যানেল।
3. ট্রাভেল ব্লগ ;-
বর্তমানের সব চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রাভেল ব্লগ। মানুষ কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে ইউটিউবে বা গুগলে এসে আগে সেই জায়গার ট্রাভেল ব্লগ গুলো চেক করে থাকে। তাদের এই ইনফোরমেটিভ ব্লগ বা ভিডিও ইনফোর্মেশন ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
4. ফুড ব্লগ ;-
মানুষ খাবার ছাড়া জীবন ধারন করতে পারে না। কিন্তু খাবার এখন আর শুধু জীবন ধারন করে না। খাবার এখন সৌখিন পর্যায়ে চলে গেছে। মানুষ শখ করেও এখন নানান প্রজাতির খাবার খেয়ে থাকে।
আর সেই খাবারের মেনু নিয়ে অনেক ফুড ব্লগার সেই রেসেপি নিয়ে তাদের ব্লগে বা ইউটিউবে ভিডিও দিয়ে থাকে।
তা দেখে ভোজন রসিকেরা তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করে বা পছন্দের খাবার কোথায় পাওয়া যায় তার তথ্য পেয়ে থাকে।
5. এনিমেশন ;-
বর্তমানে সারা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কার্টুন বা এনিমেশন। এনিমেশন ভিডিও এর মাধ্যমে বর্তমানে সিনেমা ও করা সম্ভব হচ্ছে। এনিমেশন ভিডিও এখন আর শুধু ছোট বাচ্ছাদের মাঝেই সীমিত নেই। শুধু কার্টুন ফিল্ম নয় এনিমেশন দ্বারা পূর্নদৈর্ঘ সিনেমাও তৈরি হচ্ছে।
আর শুধু সিনেমা নয় ছোট ছোট ক্লিপ ভিডিও আকারে ইউটিউবে আপলোড দিয়ে যুবক-যুবতীরা আয়ের উৎস করে নিয়েছে।
6. গেম স্ট্রিমিং করে আয়;-
বর্তমানে আরেকটি অনলাইনে জনপ্রিয় কাজ হলো গেমিং। অনলাইনে ভিডিও গেম খেলে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ স্ট্রিমিং করে আয়ের আরেকটি পথা খুজে নিয়েছে বর্তমানের যুব সমাজ।
গেম স্ট্রিমিং বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে।
ভিডিও গেম স্ট্রিমিং একটি স্পোর্টস লেভেলে পৌঁছে গেছে।
এখন অনেক দেশেই ভিডিও গেমের ও টুর্নামেন্ট হিসেবে আয়োজন করা হয়। অন্যান্য খেলার মতোই এ আয়োজিত হয়ে থাকে এসব টুর্নামেন্ট।
7. ওয়েব ডিজাইন;-
আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে এই ওয়েব ডিজাইন। মূলত একটি ওয়েবসাইট কে সাজানোই হলো ওয়েব ডিজাইন। ওয়েব ডিজাইন করার জন্য একজন দক্ষ কোডার বা প্রোগ্রামার তার কোডিং এর দক্ষতা দিয়ে ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজটিকে গড়ে তোলে।
একটি ওয়েবসাইট দেখতে সুন্দর স্বাভাবিক মনে হলেও তার পিছনে থাকে হাজারো কোড। html, css,jaba সব চেয়ে জনপ্রিয় হলেও আরো অনেক প্রোগ্রাম কোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া অন্যান্য অনেক উপায় আছে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করা যায়। বিভিন্ন এয়ারড্রপ কিংবা বিশ্বত্ব সাইট গুলো বিনা জামানতে কাজের সুযোগ করে দিয়ে থাকে।
ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে যাদের বিশাল কোন জ্ঞান নেই ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য তারাও অনলাইনে ইনকাম করছে। তারা ওয়েবসাইট বিজিটে কিংবা সোসিয়াল মেডিয়া লাইক কমেন্ট কিংবা শেয়ার করার মাধ্যমেও কিছু কিছু সাইট টাকা উপার্জন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
তাছাড়া বর্তমানে আমার পরিচিত অনেকেই দেখছি বিভিন্ন সাইটে এফিলেট (Affiliate) মার্কেটিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছে। এফিলেট মার্কেটিং হলো নিজেদের সাইটে বা চ্যানেল এর মাধ্যমে ট্রাফিক তৈরি করে তার মাধ্যমে কোন পন্য বিক্রি করতে সাহায্য করা। এতে করে তাদের লাভের একটি অংশ শেয়ার করা হয় যাদের মাধ্যমে পন্যটি কেনা বেচা সম্পন্ন হয়ে থাকে।
সময় আর ট্রাফিক তৈরি করতে পারলে মাস শেষে ভালো টাকা ইনকাম করা সম্ভব। এফিলেট মার্কেটিং এখন প্রোফেশনাল পর্যায়ে চলে গেছে। অনেকেই এটাকে পার্ট টাইম পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
ই-কমার্স ;-
ই-কমার্স বা ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা এখন আমাদের কাছে খুব পরিচিত একটা নাম। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ই-কমার্স প্রতিষ্টা করা সম্ভব। যেমন- ফেসবুকে একটি পেজ খুলেই পন্য বেচা-কেনা সম্ভব হচ্ছে। অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন হচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই এখন পন্য কেনা-বেচা সম্ভব হচ্ছে।
যদিও ইদানীং সময়ে বাংলাদেশে ই-কমার্স নিয়ে কিছুটা ভিভ্রান্তের সৃষ্টি হয়েছে তার পরেও একটি বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার এই ই-কমার্স।
ই-কমার্সের মাধ্যমে একটি যুবক খুব সহজেই কোন জায়গা ছাড়াই বা খুব বেশি ইনভেস্ট ছাড়াই উদ্যোক্তা হতে পারছে। এতে যেমন শিক্ষিত যুবকেরা চাকরির পিছনে না দৌড়ে নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে দেশের উন্নতির অংশীদার হতে পারছে।
দেশের উন্নয়নে অনলাইন ইনকামের গুরুত্ব ;-
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি অংশ আসছে আমাদের দেশের এই মুক্ত কাজ করা ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকেই। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের কাজের অনেক চাহিদা বিদমান। তাদের কাজ যেমন গুনগত মান সম্মত তেমনিই অন্যন্য দেশের তুলনায় পেমেন্ট ও অনেক কম।
অর্থাৎ আমরা বলতেই পারি যে দেশের উন্নয়নে এই অনলাইন ইনকাম বিশাল একটি ভূমিকা পালন করে আসছে। আরও নানান উপায়ে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করা সম্ভব। মুক্ত চিন্তা ও মুক্ত কাজ করার চিন্তা ভাবনা নিয়ে হাজারো যুবক ফ্রিল্যান্সিং করে দেশের উন্নয়নের বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।
ধন্যবাদ হাজারো রাত জাগা ফ্রিল্যান্সিং করা ভাইদের।
আপনিও হতে পারেন দক্ষ একজন ফ্রিল্যান্সার। তার জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ যা আপনারা আপনাদের এলাকার আশেপাশেও পেয়ে যাবেন খুব সহজে। সরকার ন্ন মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং কাজের ও সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। তাই চাকরির পিছনে না দৌড়ে যুকব ভাইদের উচিত অনলাইনে আয়ের উৎস কে একটি সুযোগ হিসেবে নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করা।
1 Comments